বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না বিউটির। এই নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকত। শনিবার এই বচসা চরমে পৌঁছয়। সৌজন্যে একটি প্লাস্টিকের ঝুড়ি। মাত্র ১০ টাকা দিয়ে একটি ঝুড়ি কিনেছিলেন তিনি। তা নিয়ে আপত্তি তোলেন শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। এরপরই বিউটি আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ। শনিবার দেড় বছরের ছেলের সামনেই ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন। ছেলের কান্নার আওয়াজ পেয়ে দরজা খুলে বিউটির ঝুলন্ত দেহ বার করা হয়। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিউটির শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। একজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার আসল নাম বিউটি মণ্ডল দাস (২৫)। স্থানীয় সূত্রে
খবর, বছর তিনেক আগে মুর্শিদাবাদের সালারের কাগ্রামের নিতাই দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় বিউটি
মণ্ডলের। বিউটির বাপের বাড়ি মুর্শিদাবাদের হরিগঞ্জ গ্রামে। প্রেম করে বিয়ে। বিয়ের পরেই
নিজের নামের সঙ্গে স্বামীর পদবী জুড়ে নেন। প্রথম প্রথম ভালোই চলছিল। তবে বছর দেড়েক
আগে ছেলে অঙ্কুশের জন্মের পর থেকে সব বদলে বদলে যায়। বিউটির বাবা-মার অভিযোগ, নিতাই
কর্মসূত্রে কেরলে থাকেন। জামাই না থাকার সুযোগে বিউটির উপর অকথ্য অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির
লোকজন। সামান্য ছুতোয় মেয়েকে বকাঝকা করা হত।
মৃতার বাবা শচীন মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘মেয়ের উপর অত্যাচারে পূর্ণ
মদত ছিল বিউটির স্বামী নিতাইয়েরও। তারা প্রায়ই বিউটিকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার ভয় দেখাত। তাই সব মুখ
বুজে সব সহ্য করত বিউটি। তবে শুক্রবার সেই অত্যাচার এতটাই বেড়ে যায় যে মেয়ে ফোন করে
আমাকে কাগ্রাম থেকে নিয়ে যেতে বলে। সেই মতো বিকেলেই মেয়েকে আনতে যাই। সন্ধ্যা পর্যন্ত
ওই বাড়িতেই ছিলাম। কেউ আমার সঙ্গে কথা বলেনি। মেয়েকে বলি সকালে নিয়ে যাব। এরপর ওর এক
খুরশ্বশুড় গোপাল দাসের বাড়িতে শুতে যাই। সকালে শুনি এই কাণ্ড। মেয়েটাকে ওরা মেরে ফেলল।
মৃতার মা সরস্বতী মণ্ডল বলেন, মেয়ের উপর গত দেড় বছর ধরে প্রতিদিনই
অত্যাচার হতো। প্রতিবেশীদের মুখে শুনলাম, মেয়ে হকারের থেকে ১০ টাকা দিয়ে প্লাস্টিকের
ঝুড়ি কিনেছিল। তা নিয়ে সারাদিন মেয়ের উপর অত্যাচার করা হয়। বাবার সামনেই এই গঞ্চনা
সম্ভবত মেয়ে সহ্য করতে পারেনি। মেয়ের খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি।
0 মন্তব্যসমূহ