সভ্যতার প্রাণস্পর্শে একসময় উদ্বেল ছিল আমাজন (amazon forest)। আজ যেখানে ঘন জঙ্গল, সেখানেই গড়ে উঠেছিল সমৃদ্ধ জনপদ। একটি দু’টি নয়, ১০ হাজার থেকে ২৪ হাজার (thousands) এমনই জনপদ চলে গিয়েছে আমাজনের কালের গর্ভে। জঙ্গলের পুরু চাদরের নীচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের এমনই নানা অমূল্য রতন (ancient structures)। জানাচ্ছেন গবেষকরা। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আমেরিকার মাটিতে পদার্পণ, একটি যুগ সন্ধিক্ষণ। তাঁর আগমনের আগে আমেরিকায় থাকতেন আদিবাসীরা। আর সেই যুগ পরিচিত প্রি কলাম্বিয়ান যুগ নামে। সেই যুগেই প্রায় ১২ হাজার বছর ধরে আদিবাসীরা তাঁদের বসবাসের স্থলকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়েছিলেন।
ভেনিসিয়াস পেরিপাতোর নেতৃত্বে ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্পেস রিসার্চের গবেষকরা আমাজন জঙ্গলের (amazon forest) সভ্যতার নির্দশন নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। সেখানেই উঠে এসেছে চমকপ্রদ সব তথ্য। ২৬ লক্ষ স্কয়ার মাইল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে আমাজন জঙ্গল। গবেষকরা আমাজনের প্রাচীন অধিবাসীদের নতুন ধরনের ২৪টি কাজের কথা তুলে ধরেছেন। এরমধ্যে রয়েছে রাস্তা নির্মাণ, সুরক্ষিত গ্রাম, বাজার-ঘাট। হাজার বছর ধরে মানুষের উপকারে লাগবে এমন গাছগুলিকেও চিহ্নিত করেছিলেন তাঁরা। এরপর তাঁরা সেই গাছগুলির চারা রোপণও করতেন। দূর নিয়ন্ত্রিত লাইডার সেন্সিং ব্যবস্থার মাধ্যমে এমনই নানা তথ্য হাতে পেয়েছেন বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
আমাজন অববাহিকা (amazon forest) থেকে সম্প্রতি বেশ কিছু প্রত্নসামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। সেই সামগ্রীগুলির উপর পরীক্ষা করে পেরিপাতো এবং সহযোগীরা জানিয়েছেন, এখনও ১০ হাজার ২৭২ থেকে ২৩ হাজার ৬৪৮টি প্রত্ন ক্ষেত্র এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গিয়েছে। এগুলির বেশিরভাগেরই সন্ধান পাওয়া যাবে দক্ষিণ আমাজনে। তাঁদের এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স’ পত্রিকায়। পেরিপাতোরা লিখেছেন, ‘প্রি কলাম্বিয়ান যুগে আমাজনজুড়ে ঘন জঙ্গলের মধ্যে সভ্য মানুষজের বাস ছিল। তাঁরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে খনন, নদীর গতিপথ, মাটির গুণমান বৃদ্ধি, উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। সেই জ্ঞানকে তাঁরা নিজেদের সমৃদ্ধির কাজে ব্যবহার করেছিলেন।’ তাঁদের সেই জ্ঞানের ব্যবহার এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আমাজনে। পুকুর তৈরি, কূপ খনন, পরিখা নির্মাণ, জিওগ্লিফস সবই তাঁরা তৈরি করেছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ