নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত। তল্লাশি চালানোর (fake raid) নামে ১১ লক্ষ টাকা তোলা আদায়ের অভিযোগে মহারাষ্ট্রে (maharastra) চাকরি খোয়ালেন তিন জিএসটি (gst official) আধিকারিক। রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে তিন আধিকারিককে ডিসমিস করার খবর প্রকাশ করেছে মহারাষ্ট্র জিএসটি দপ্তর। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই প্রথম সংবাদপত্রে এমন বিজ্ঞাপন (newspaper ad) দেওয়া হল। রাজীব মিত্তালের নেতৃত্বাধীন রাজ্য জিএসটি দপ্তরের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে আমলা মহলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
২০২১ সালের ১৪
জুন কালাবাদেবীতে ব্যবসায়ী লালচাঁদ ওয়ানিগোতার অফিসে তল্লাশি চালান তিন জিএসটি আাধিকারিক—
হীতেশ বাসাইকর, মাচিন্দ্র কানগানে এবং প্রকাশ শেহগর। তাঁদের সঙ্গে ছিল আরও এক ব্যক্তি।
অফিসে ঢুকে তাঁরা সমস্ত নগদ তাঁদের সামনে টেবিলে জড়ো করতে বলেন। তাঁদের নির্দেশে ৩০
লক্ষ টাকা সামনে আনা হয়। এরপর লালচাঁদকে জিএসটি নথি দেখাতে বলেন তাঁরা। জমা টাকা থেকে
১১ লক্ষ ‘বাজেয়াপ্ত’ করে জিএসটি বাবদ জমা করে দেবেন বলে জানান। তবে সেই টাকা কোষাগারে
জমা হয়নি। ব্যবসায়ী লালচাঁদ বিষয়টি মাজগাঁও জিএসটি অফিসে জানান। জিএসটি অফিসের পক্ষ
থেকে জানানো হয়, এই ধরনের কোনও তল্লাশি দপ্তরের পক্ষ চালানো হয়নি। তখনই লালচাঁদ বুঝতে
পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার। এরপর তিনি এলটি মার্গ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর
অভিযোগের ভিত্তিতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই বছর ১৭ সেপ্টেম্বর হীতেশ, মাচিন্দ্র
এবং প্রকাশ এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে এলটি মার্গ পুলিশ।
হীতেশ, মাচিন্দ্র
এবং প্রকাশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে মহারাষ্ট্রের জিএসটি দপ্তর। সেখানে দোষী
সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন মহারাষ্ট্র জিএসটির নেতৃত্বাধীন
রাজীব মিত্তল। প্রশাসনিক এবং আইনগত সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে এই সিদ্ধান্ত বলে মিত্তল জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত যেমন চলছে তেমনই চলবে। আমরা দপ্তরের
পক্ষ থেকে আমরা তদন্তের সিদ্ধান্ত নিই। সেইমতো তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করি।
তাঁদের মতামত জানার পর বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দপ্তরের ভাবমূর্তির রক্ষায় এটা
ছাড়া উপায় ছিল না।’
মিত্তলের এই
উদ্যোগের প্রশংসা করেছে আমলা মহল। এক প্রবীণ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘মিত্তল একটি সাহসী
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরবে।’
0 মন্তব্যসমূহ