ইংল্যান্ডের গ্রেস স্ক্রিভেন্স এবং নিমথ হল্যান্ডের উইকেট তুলে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা অর্চনা দেবী (archana devi)। ভারতীয় মহিলা দলের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ (u19 world cup) জয়ের আনন্দের মধ্যেই অর্চনা দেবীদের উঠে আসার ভিন্নতর দিক নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। আর তাতেই ফুটে এসেছে এই ভারতের মধ্যে রয়েছে অন্য ভারত। উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের রতই পুরওয়া গ্রামে জন্ম বেড়ে ওঠা অর্চনার। আর তাঁর এই জায়গায় পৌছানোর পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে মা (mother) সাবিত্রীদেবীর।
২০০৮ সালে ক্যানসারে মৃত্যু হয় অর্চনার (archana devi) বাবার। তিন
সন্তান এবং বিরাট পরিমাণ ঋণের বোঝা তখন পরিবারের উপর। ২০১৭ সালে সাপের কামড়ে মৃত্যু
হয় সাবিত্রীদেবীর ছোট ছেলে বুধিমান সিংয়ের। এরপর থেকেই সাবিত্রীদেবীকে ডাইনি বলে কটাক্ষ
শুরু করেন কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামের লোকজন। তাঁকে শুনতে হয়, ‘স্বামী-সন্তান খাওয়া এই
মহিলাকে দেখলে দিন খারাপ যাবে।’ তাঁকে দেখে অনেকে রাস্তাও বদল করে। বিশ্বকাপজয়ী অর্চনা
(archana devi) জানিয়েছেন, ‘আমাদের বাড়িকে দেখিয়ে অনেকে ডাইনির বাড়ি বলত।’
তবে গ্রামবাসীদের এই মানসিকতার ছাপ অর্চনার উপর পড়তে দেননি সাবিত্রী
দেবী। ক্রিকেট পাগলী মেয়েকে ভর্তি করে দেন গ্রাম থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে মোরাদাবাদের
কস্তুরবা গান্ধী আবাসিক বালিকা বিদ্যালয়ে। তখন আবার গ্রামবাসীরা বলতে থাকেন, মেয়েকে
‘ধান্দায়’ নামিয়ে দিয়েছেন সাবিত্রী। সে দিনের কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সাবিত্রীদেবী।
তাঁর কথায়, ‘ওরা বলতে থাকে মেয়েকে বিক্রি করে দিল। মেয়েকে খারাপ ধান্দায় নামিয়ে দিল।
এসব কথা আমার সামনেই বলত ওরা।’ আর আজ সেসব লোকদের মুখ বন্ধ। তাঁরা এখন অর্চনার (archana
devi) সাফল্যে মুগ্ধ। রবিবার সন্ধ্যেয় তিল ধারণের জায়গা ছিল না অর্চনাদের রতই পুরওয়া
গ্রামের বাড়িতে। সাবিত্রীদেবী বলেন, ‘এখন আমার বাড়ি অতিথিতে ভর্তি। তাঁদের দেবার মত
যথেষ্ট কম্বল আমাদের নেই। যে প্রতিবেশীরা আমাদের বাড়িতে এসে একফোঁটা জলও খেত না, তারাই
এখন আমাদের সাহায্য করতে উঠে পড়ে লেগেছে।’ সাফল্য এইভাবে বদলে দিয়েছে অর্চনার (archana
devi) মা সাবিত্রী দেবীর জীবন।
0 মন্তব্যসমূহ