অপরাধেরও প্রকারভেদ হয়। এক অপরাধীকে ভয় পায় অন্য অপরাধীরা! অপরাধ জগতের এই চেনা চিত্র এবার মধ্যপ্রদেশের সাগর সেন্ট্রাল জেলে। এক সিরিয়াল কিলারের (serial killer) ভয়ে ঘুম উড়েছে (sleepless) অন্য জেল বন্দিদের (prisoners)। পাঁচ-পাঁচটি খুনে অভিযুক্ত ১৯ বছরের শিবপ্রসাদ ধ্রুব আসতেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে সাগর জেলে। সবাই মুখ বাড়িয়ে দেখে নিচ্ছে, সে কি করছে।
এক সপ্তাহ ধরে ধ্রুব ওরফে হালকুর ভয়ে তটস্থ ছিল সাগর শহর। ঘুমন্ত নিরাপত্তা রক্ষী দেখলেই সে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করত। তাকে ধরতে রাতে পুলিস টহল দিতে শুরু করে। বিপদ বুঝতে পেরে সে সাগর ছেড়ে ভোপাল পালায়। তবে থামেনি তার খুনে কার্যকলাপ। সে যখন ধরা পড়ল, ততক্ষণে পাঁচটি খুন হয়ে গিয়েছে।
৩ সেপ্টেম্বর ধ্রবকে সাগর সেন্ট্রাল জেলে আনতেই, সে খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপর জেলবন্দিরা রাতে ঘুমনো ছেড়ে দেন। শুধু কি জেলবন্দি, জেলের আধিকারিকদের পক্ষেও ঘুমনো দুষ্কর হয়ে ওঠে। অগত্যা জেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সকলকে বোঝানো শুরু হয়, ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু খুনে অভিযুক্তকে সামনে ঘুরে বেড়াতে দেখতে পেয়ে কে আর আশ্বস্ত হয়েছে। অগত্যা ধ্রুবকে সরিয়ে সলিটারি সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই সলিটারি সেলে রয়েছে একটি অ্যাটাচ বাথ। তবে সাধারণ সেলের থেকে অনেকটাই দূরে। ধ্রুব অবশ্য তাকে ব্যারাকে অন্য জেলবন্দিদের সঙ্গে রাখার আর্জি জানিয়েছে। তবে এর তীব্র বিরোধিতা করেছে অন্যরা। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘জানিনা ও মানসিক বিকারগ্রস্ত কিনা। তার উদ্দেশ্য বোঝা দায়। মনে হয় না খুন করা নিয়ে সে অনুতপ্ত। তবে জেলের নিয়ম মেনে ওকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে কিছু ধর্মীয় বই চেয়েছিল। দেওয়া হয়েছে।’
জেল আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ধ্রুবর বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। কোনও কারণ ছাড়াই সে খুন করে। সম্প্রতি ভোপালে আদেশ খামারা নামে এক সিরিয়াল কিলারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে এখন ভোপাল জেলে রয়েছে। ৩৪ জনকে খুন করেছে সে। তবে সে ডাকাতির উদ্দেশে খুন করে। ধ্রুবর এমন কোনও মোটিফ পাওয়া যায়নি। সাগর জেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত তার সঙ্গে কেউ দেখা করতে আসেনি।
সূত্রের খবর, জেরায় ধ্রুব জানিয়েছে, বিখ্যাত হতে চায়। তাই সে খুন করেছে। কেজিএফ-২ সিনেমার ‘রকি ভাই’-এর অনুপ্রেরণায় সে এই কাজ করেছে। তার পরবর্তী লক্ষ্য পুলিসকর্মীরা।
0 মন্তব্যসমূহ