মা শীতলার দেবীর শক্তি তাঁর উপর ভর করে। এই দাবি (claims) করে ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য রোগব্যাধী সারানোর (cure cancer) ব্যবসা ফেঁদেছিলেন (dupes) ‘অদ্ভুত বাবা’ (supernatural baba)। রাত হলেই মন্দির চত্বরে বসত বাবার দরবার। উপার্জন ছিল ভালই। আর এই উপার্জনের বখরা নিয়ে মন্দিরের পুরোহিতের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় বাবার। রেগে গিয়ে পুলিশকে খবর দেন পুরোহিত। জারিজুরি ধরা পড়ে যাবে বুঝে গা ঢাকা দিয়েছেন বাবা। পলাতক মন্দিরের পুরোহিতও। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের।
‘অদ্ভুত বাবা’র প্রকৃত নাম মুকেশ ননিয়া। বাড়ি বিহারের কইমুর জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এলাকার অনেকের মতোই পরিযায়ী শ্রমিক হিসেব অন্ধ্রপ্রদেশে কাজে গিয়েছিলেন মুকেশ। বছর আঠারো এভাবেই কাটে। দু’বছর আগে তিনি গ্রামে ফিরে আসেন। তবে পরিচিত মুকেশকে আর চিনতে পারেননি গ্রামের লোকজন। চিনবেনই বা কীকরে? তাঁর পরনে লাল শাড়ি। ঠোঁটে লাল লিপস্টিক। সিঁথি রাঙানো সিঁদুরে। গ্রামবাসীদের তিনি জানান, ১৮ বছর সাধনা করে দেবী শীতলার বর পেয়েছেন। ক্যান্সার, সন্তানহীনতার মতো রোগ তিনি সারিয়ে তুলতে পারেন।
এরপর কালী মন্দির চত্বরেই তিনি দরবার বসাতে শুরু করেন। তাঁর দৈবী ক্ষমতায় বিশ্বাস করে সেখানে হাজার হাজার মানুষ আসতে শুরু করে দুরারোগ্য ব্যধী সারানোর বাসনায়। যার অধিকাংশই মহিলা। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, মুকেশ একজন জালিয়াত। তোলা আদায় করত। দৈবী ক্ষমতার দাবিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। গত মাসে মুকেশের সমর্থক এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। মুকেশের নামে চইনপুর থানায় মামলা দায়ের হয়।
এর আগেই অবশ্য মুকেশ ঘাঁটি গাড়েন উত্তরপ্রদেশে। বারাণসীর কাছে দামোরি গ্রামে একটি মন্দিরে দরবার বসাতেন মুকেশ। উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে তিন থেকে চার হাজার মানুষ আসতেন তাঁর কাছে। রোগ সারাতে তাঁরা মুকেশের তুকতাকের উপর ভরসা করতেন। বিনিময়ে টাকা দিতেন মুকেশকে। চলছিল ভালই। বাদ সাধলেন মন্দিরের পুরোহিত রাম ভরোস। তিনি আরও টাকা চেয়ে বসলেন। রামই গিয়ে পুলিশকে বাবার ‘কীর্তি’র কথা জানিয়ে দেন। এরপর তাঁরা দু’জনেই নিরুদ্দেশ হয়ে যান। মুকেশের খোঁজে বিহারের বাড়িতে গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। খোঁজ না পেয়ে মুকেশের বাড়ির দরজায় পুলিশ লুক আউট নোটিশ লটকে দিয়ে এসেছে।
0 মন্তব্যসমূহ