অক্ষয় কুমার নন। তিনি অরুণাচলম মুরুজ্ঞাননথমের পথে হেঁটে মানুষের হাতে স্যানিটারি ন্যাপকিন তুলে দেন (distributes)। তিনি সিঙ্গুরের (singur) প্যাডম্যান (Padman) সুমন্ত বিশ্বাস (sumanta biswas)। ঋতুকালিন সময়ে মহিলাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখার চেষ্টায় নিরন্তর তিনি। ওই সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করে যেন মহিলারা বিপদ ডেকে না আনেন, তার প্রচার করে থাকেন সুমন্ত। একাজে তিনি পাশে পেয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীদের। পেশায় গৃহশিক্ষক সুমন্ত এখন আক্ষরিক অর্থেই পশ্চিমবঙ্গের (west bengal) প্যাডমান।
শুরুটা হয়েছিল সিঙ্গুর স্টেশন লাগোয়া বস্তিতে। এরপর তাঁর কাজ ছড়িয়ে পড়ে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দক্ষিই চব্বিশ পরগনায়। সচেতনতার কাজে তিনি ছুটে গিয়েছেন পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও। তিন বছর ধরে নিজের পয়সায় গ্রামে গ্রামে মহিলাদের ন্যাপকিন দিয়ে থাকেন সুমন্ত। ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি সংগঠন তৈরি করেছেন। নাম ভূসঙ্কল্প। যাঁদের ন্যাপকিন কেনার পয়সা নেই, তাঁদেরই বিনামূল্যে তা দিয়ে থাকেন সুমন্ত। সিঙ্গুরকে ঘিরে তাঁর অনেক স্বপ্ন। সিঙ্গুর রেল বস্তিকে আদর্শ করে সারা রাজ্যে তাঁর কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ুক, চাইছেন সুমন্ত। রেশনের মাধ্যমে যাতে ন্যাপকিন দেওয়া হয়, তার দাবি করেছেন তিনি।
তাঁর সেই দাবি চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেও দিয়েছেন। ঋতু নিয়ে সামাজিক ছুৎমার্গতাও ভাঙতে চান তিনি। এখনও ন্যাপকিনের প্যাকেট কিনতে গিয়ে অনেকেই ইতস্তত বোধ করেন। ইতস্তত দোকানদারও ন্যাপকিনের প্যাকেট কালো পলিথিনে বা খবরের কাগজে মুড়ে দেন। সুমন্তের প্রশ্ন, এমনটা হবে কেন? এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এতে লজ্জার কী আছে? এই নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরে প্রচারও করছেন তিনি।
কেন, তিনি নিজে থেকে এমন চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন? সুমন্ত মনে করেন, সমাজের জন্য কিছু করতে গেলে আগে মহিলাদের ক্ষমতায়ন দরকার। কিন্তু এর প্রাথমিক শর্ত, মহিলাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করা। কিন্তু এই একটি ব্যাপারে সমাজ চিরকাল উদাসীন থেকেছে। তাই তাঁদের এই উদ্যোগ।
0 মন্তব্যসমূহ