ভারতীয় ফুটবলের কাল দিন। প্রভাব খাটানোর অভিযোগে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে (all india football federation) নিষিদ্ধ (suspend) করল আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ামক সংস্থা ফিফা (fifa)। এই সিদ্ধান্তের জেরে ১১ থেকে ৩০ অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত মহিলাদের অনুর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজনও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। অন্য কোনও দেশে এই বিশ্বকাপ আয়োজন করা হবে ফিফার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
৮৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এআইএফএফকে নিষিদ্ধ করল ফিফা। সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘ফিফার ব্যুরো অব কাউন্সিল এআইএফএফকে সর্বসম্মতিক্রমে সাসপেন্ড করছে। এখন থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের (third party influences)কারণেই এই সিদ্ধান্ত। এতে ফিফার আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। এটা গুরুতর অপরাধ।’
এই নিষেধাজ্ঞা কবে উঠবে? কোনও দিনক্ষণ জানায়নি ফিফা। তবে বেশ কয়েকটি শর্তের কথা জানানো হয়েছে ফিফার বিবৃতিতে। তাতে বলা হয়েছে, এআইএফএফের এক্সিকিউটিভ কমিটির জন্য কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটি সম্পূর্ণভাবে এআইএফএফের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ শুরু করলে, তবেই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
ফিফা কেন ভারতীয় ফুটবল নিয়ে এতবড় সিদ্ধান্ত নিল? আসলে ফিফার অনুমোদিত কোনও দেশের ফুটবল বোর্ডগুলি স্বাধীনভাবে কাজ করবে, এটাই তারা চায়। স্থানীয় প্রশাসন বা আইনি হস্তক্ষেপ কোনওভাবেই ফিফা বরদাস্ত করে না। এর আগেও বাইরের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে নানা দেশের অনুমোদিত বোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ফিফা। এবার ভারতীয় ফুটবল বোর্ড এআইএফএফকেও এই কারণে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়তে হল।
সময়ে নির্বাচন না করানোর জন্য গত ১৮ মে প্রফুল্ল প্যটেলকে এআইএফএফের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মামলা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর এই নির্বাচন করানোর কথা ছিল। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ আর দাভের নেতৃত্বে প্রশাসক কমিটি (CoA) তৈরি করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। জাতীয় ক্রীড়া নীতি এবং আদর্শ নিয়ম মেনে নতুন করে এই কমিটিকে এআইএফএফের সংবিধান তৈরির দায়িত্ব দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় CoA-র সুপারিশ মেনে এআইএফএফের নির্বাচন করাতে হবে। ২৮ আগস্ট নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হয়। তবে এতটা সময় দিতে চায়নি ফিফা। ভারতকে যে ফুটবল থেকে নির্বাসন দেওয়া হচ্ছে, তার ইঙ্গিত ৫ আগস্টই দিয়ে রেখেছিল ফিফা।
0 মন্তব্যসমূহ