Bangladesh Economy: শ্রীলঙ্কার পর কি বাংলাদেশ দেউলিয়া হওয়ার পথে| ইঙ্গিত সেদিকেই

bangladesh-economic-situation-headed-to-srilanka-way

প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কার (srilanka) আর্থিক দুর্দশা (economic situation) এখনও কাটেনি। একই অবস্থা পাকিস্তানের। এবার কি প্রতিবেশী বাংলাদেশও (bangladesh) আর্থিক দেউলিয়া হওয়ার পথে? ঘটনা পরম্পরা কিন্তু সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশও ঋণের ফাঁদে পড়েছে। গত কয়েক মাসে তাদের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় তলানিতে এসে ঠেকেছে। বাণিজ্যিক ঘাটতিও বিপুল। বাধ্য হয়ে দিনের অনেকটা অংশ বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার আর্থিক দেউলিয়াপনার ক্ষেত্রেও প্রাথমিক স্তরে এই উপসর্গগুলিই দেখা দিয়েছিল। তাই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই।

কয়েক মাস আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে পদ্মা সেতুর। এই সেতু তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থে। তখন প্রধানমন্ত্রী বড় মুখ করে বাংলাদেশের আর্থিক স্বনির্ভরতার প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু কয়েক মাসরে মধ্যেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক স্তরে ঋণ চেয়ে দরবার শুরু করেছে বাংলাদেশ। জানা যাচ্ছে, আন্তর্জাতি অর্থ ভাণ্ডারের (IMF) কাছে ৪৫০ কোটি ডলার এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের (World Bank) কাছে ১০০ কোটি ডলার এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের (ADB) কাছে ১০০ কোটি ডলার ঋণের তদ্বির শুরু করেছে ঢাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈদিশিক মুদ্রার সঞ্চয় কমে যাওয়াতেই বিপুল ঋণের জন্য দরবার শুরু করেছে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় দেশ হিসেবে IMF-এর কাছে দরবার করল তারা।

শ্রীলঙ্কার মতোই খনিজ তেলের দাম বাড়িয়ে জনগণের রোষের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ সরকার। শুক্রবার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এক লপ্তে লিটার পিছু পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৪৪ বাংলাদেশি টাকা। ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৪ বাংলাদেশি টাকা প্রতি লিটার। ১৯৭১ সালে বাংলেদেশের স্বাধীনতার পর এই প্রথম এতটা দাম বাড়ানো হল বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর। হঠাৎ পেট্রোল ও ডিজেলের এই দাম বৃদ্ধিতে জন মনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার থেকে পেট্রোল স্টেশনগুলিতে গাড়ি ও মোটর সাইকেলের লম্বা লাইন। এই নিয়ে একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে সবাই একসঙ্গে পুরো ট্যাঙ্ক ভরে দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছেন। 

বাংলাদেশ স্টুডেন্টস’ ফেডারেশনের মতো ছাত্র সংগঠন হঠাৎ এই দাম বৃদ্ধির বিরোধিতায় পথে নেমেছে। ঢাকা ট্রিবিউনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ন্যাশনাল মিউজিয়ম, শাহবাগে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। তবে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত ৮ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার লোকসান করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। তাই দাম বৃদ্ধি ছাড়া কোনও পথ ছিল না। 

কেন বাংলাদেশের এই অবস্থা হল? (Why Bangladesh faces this situation?)

৪১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের অর্থনীতি নিয়ে ভালই ছিল বাংলাদেশ। বিশ্বের অন্যতম গতিশীল অর্থনীতি হিসেবে তারিফ কুড়িয়েছিল তারা। ২০২১ সালের নভেম্বরে নিম্ন উন্নয়নশীল অর্থনীতির (Least developed nations) তালিকা থেকে বাংলাদেশকে সরিয়ে দেয় রাষ্ট্রসঙ্ঘ (United Nations)। কিন্তু ২০২২ সালে  আন্তর্জাতিক নানা কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে। যার অন্যতম কারণ, রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধ। এর ফলে আমদানি নির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতি চাপে পড়ে যায়। বিশেষত,  জ্বালানি এবং খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় বাংলাদেশের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে। এরজেরেই আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলির কাছে বাংলাদেশকে হাত পাততে হয়। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ