চল্লিশ বছর ধরে তুরন্ত গতি বজায় রাখার পর চীনে (china) অর্থনীতির অবনমন (economy in danger) শুরু হয়েছে। এমনিতে কমিউনিস্ট শাসকদের নজর এড়িয়ে কোনও খবর প্রকাশ হওয়া মুস্কিল। তবে এখন আর চেপে রাখা যাচ্ছে না। নানা ঘটনাতেই তার প্রমাণ। গত মাসে ৮০টি ব্যাঙ্ক দেউলিয়া (default) ঘোষণা হয়েছে চীনে। জমা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না চীনের মানুষ। এই নিয়ে ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে ট্যাঙ্ক দেখিয়ে তাদের হঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই চিত্র মনে করিয়েছে কুখ্যাত তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের স্মৃতি। এবার কর্মী ছাঁটাইয়ের (layoff) কথা ঘোষণা করল চীনা মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক সংস্থা শাওমি। ৯০০-র বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সত্তরের দশকের শেষে দেং জিওয়াপিং ঘোষণা করেছিলেন, ‘বিড়াল সাদা কি কালো সেটা বড় কথা নয়, সেটি ইঁদুর ধরছে কি না, সেটাই বড় কথা’। ১৯৭৮ সালে মাওয়ের দেখানো পথ পরিত্যাগ করে তিনি দেশকে দ্রুত শিল্পায়নের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। মাও সে-তুংয়ের আমলে চীনের বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র ছিল। দেং জিওয়াপিং চীনের অর্থনীতি দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। এর কারণ হলো দেং জিয়াওপিং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎপাদন অনুমোদন করেছিলেন। তাঁর এই সংস্কারের কারণেই চীনের ৮০ কোটি দরিদ্র মানুষ উঠে দাঁড়িয়েছে। এরপর গত চার দশকে অপ্রতিরোধ্য ছিল চীনের জয়যাত্রা। আমেরিকাকেও চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিল তারা। এই পরিস্থিতিতিতে করোন এসে দুয়ারে এসে হাজির হয়। রপ্তানি নির্ভর চীনের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে।
সাউথ চায়না মর্নিংয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, শাওমির মোবাইল বিক্রি কমেছে। তাই কর্মী ছাঁটাই ছাড়া কোনও পথ নেই। মার্চ মাসে ৩৩ হাজার ৭৯৩ থেকে সংস্থার কর্মী কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৮৬৯ জন। ৯০০ কর্মীকে ছাঁটাই করতে হয়েছে। শতাংশের হিসেবে ২০ শতাংশ কর্মীকে ছেঁটে ফেলতে বাধ্য হয়েছে শাওমি। সূত্রের খবর, তিনমাসে শাওমির বিক্রি কমেছে ৮ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। মোট সম্পদও কমে গিয়েছে ২০৮ কোটি ইউয়ান।
0 মন্তব্যসমূহ