Tarun Majumdar: পরিচালক তরুণ মজুমদার আর নেই

bengali-film-director-tarun-majumdar-is-no-more

Tarun Majumdar: পরিচালক তরুণ মজুমদার আর নেই

‘জীবনপুরের পথিক রে ভাই/ কোনও দেশেই সাকিন না/ কোথাও আমার মনের খবর পেলাম না’ পলাতক সিনেমায় এমনই জীবন বোধের গল্প শুনিয়েছিলেন তিনি। তিনি পরিচালক (bengali film director) তরুণ মজুমদার (tarun majumdar)। তিনি আর নেই (is no more)।

সোমবার ৯১ বছর বয়সে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই প্রবীণ চিত্র পরিচালক। কিডনি এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যায় দীর্ঘ দিন ধরেই ভুগছিলেন তরুণ মজুমদার। ১৪ জুন তাঁকে ভর্তি করানো হয় এসএসকেএমে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার তাঁকে আবার ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। আর কোনও আশা দিতে পারেননি চিকিৎসকরা। সোমবার সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে মৃত্যু হয় তরুণ মজুমদারের।

সত্যজিত রায় তখন বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্র পরিচালক হয়ে উঠেছেন। তাঁকে দেখে এগিয়ে যাচ্ছেন নব তরঙ্গের পরিচালকরা। অন্যদিকে রয়েছে বাণিজ্যিক সিনেমা। সেখানে রাজ করছেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেনের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। এর মাঝামাঝি পর্যায় যদি কিছু থেকে থাকে তা হলে সেই জঁরে অন্যতম পরিচালক রূপে অবশ্যই নাম উঠবে তরুণবাবুর। যেমন তপন সিনহার। অদ্ভুত ভাললাগা আর জীবনবোধ। এই দুই বিষয়কে উপজীব্য করে সিনেমা করে গিয়েছেন তরুণবাবু। তবে সমালোচনাও তাঁর প্রাপ্য বইকি। গ্রামের সহজ সরল মানুষের মুখে শহুরে বাংলা ভাষা বসিয়ে সংলাপ নির্মাণ বোধ হয় কোনও প্রয়োজন ছিল না। 

যে গানটি দিয়ে শুরু করেছিলাম। এক সরল গ্রাম্য যুবক কি করে অবলীলায় ‘পেলাম’ বলে চলেছেন, তাও বোধগম্য নয়। একই ঘটনা আলো সিনেমার ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে। তবে কোথাও সিনেমা রস থেকে বঞ্চিত হয়নি দর্শক। আর এখনেই তরুণবাবুর সার্থকতা।

উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত ‘চাওয়া পাওয়া’ ছবিটি দিয়ে ১৯৫৯ সালে চলচ্চিত্র পরিচালনায় হাতে খড়ি তরুণ মজুমদারের। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৮। তবে এই ছবিটির পরিচালনা আসলে করেছিল ‘যাত্রিক’ গোষ্ঠী।  এর অন্য সদস্যরা ছিলেন শচীন মুখোপাধ্যায়, দিলীপ মুখোপাধ্যায়। ১৯৬৩ সালে এই যাত্রিক গোষ্ঠীর ব্যানারেই পরিচালিত হয়েছিল পলাতক। গান থেকে পরিচালনা, সবেতেই অনন্য নজির তৈরি হয়। এরপর যাত্রিক গোষ্ঠী ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। তবে ১৯৬২ সালে যাত্রিকের পরিচালনায় ‘কাচের স্বর্গ’ জাতীয় পুরস্কার পায়। যাত্রিক নাম থাকলেও সেই সিনেমাটি আসলে পরিচালনা করেছিলেন তরুণবাবুই।

দীর্ঘ চলচ্চিত্র জীবনে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে চারটি জাতীয় পুরস্কার। একটি বিএফজে পুরস্কার।  ১৯৯০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তিনি। তাঁর অন্যান্য সফল সিনেমাগুলির মধ্যে রয়েছে—

পলাতক (১৯৬৩), 

নিমন্ত্রণ (১৯৭১)

সংসার সীমান্তে (১৯৭৫) 

গণদেবতা (১৯৭৮)। 

এছাড়া বালিকা বধূ, কুহেলি, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, ফুলেশ্বরী, দাদার কীর্তি, ভালবাসা ভালবাসা, আপন আমার আপন, আলো বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ